Wednesday, October 15, 2014

বুজুর্গদের সোহবতের বরকত


কোন কোন লোক বলে থাকে, আমরা আল্লাহওয়ালা লোকদের কাছে যাইনা এজন্য যে, ওখানে গেলেই ভি-সি-আর ছাড়তে হবে, সিনেমা ছাড়তে হবে, স্বাধীনভাবে মেয়েদের প্রতি তাকিয়ে এবং হারাম প্রেমে লিপ্ত হয়ে এর স্বাদ আস্বাদন ও আনন্দ উপভোগের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে (এসব কিছু নিষেধ করে দেওয়া হবে) । এভাবে সব রকম গুনাহই তো পরিত্যাগ করে দিতে হবে ।
এর জবাবে বিখ্যাত বুজুর্গ মুহীউচ্ছুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক ছাহেব দামাত বারাকাতুহু বলেন যে, গুনাহ ছাড়তে হবে না, বরং এমনিতেই (আপনাতেই) ছুটে যাবে । আল্লাহর ওলীদের সোহবতের বরকতে এমন ঈমান, এমন ইয়াকীন নসীব হবে যে, খুশীতে আপনি বাগবাগ হয়ে যাবেন, অন্তরে সর্বদা এক অনাবিল আনন্দের অনুভূতি ও তৃপ্তি অনুভব করবেন । খুশীতে আপনি সিজদায়ে শোকর আদায় করবেন । আল্লাহর দরবারে শোকর আদায় করে বলবেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে পাপের পচা-গান্দা, দুর্গন্ধময় ম্যানহোল ও নর্দমা থেকে, পাপাচারের মলমূত্রের নাপাক ও কুৎসিত নালা সমূহ থেকে বের করে তাকওয়ার জিন্দেগী নসীব করেছেন । হে আল্লাহ, কিরূপে আমি আপনার এই মেহেরবানীর শোকর আদায় করবো !
হযরত মুহীউসসুন্নাহ অতি চমৎকার একটি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে, মনে করুন, একটা লোক দশ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করার পর আনন্দে আটখান হয়ে দ্রুত পায়ে ঘরে ফিরে চলেছে । আর মনে মনে ভাবছে, আমার স্ত্রীর জন্য অমুক জিনিস কিনবো, অমুক সামগ্রী কিনবো এবং অমুক এলাকায় এক প্লট জমি খরিদ করবো ইত্যাদি । ইতিমধ্যে তার এক অন্তরঙ্গ বন্ধু এসে তাকে বলতে লাগলো, বন্ধু, পিছনে পুলিশ আসতেছে । তোমার এই নোট সমূহের উপর পুলিশের দস্তখত আছে, ঘুষদাতারও দস্তখত আছে । এটা একটা ষড়যন্ত্র । তোমাকে ফাঁসানোর জন্য এই ঘুষ প্রদান করা হয়েছে । তাই, দ্রুত কোন বাঁচার পথ কর । 
এই দুঃসংবাদে আতঙ্কিত হয়ে সে এদিক-সেদিক দেখতেছে । হঠাৎ একটি খোলা ম্যানহোলের উপর তার নজর পড়ে । তখন অন্তর খুলে সে দোয়া করতে লাগলো যে, আল্লাহ যেন এই ম্যানহোলের মুখের ঢাকনা চোরের উপর রহমত নাযিল করে এবং তাকে নেককার বানিয়ে দেয়, যাতে করে ভবিষ্যতে আর চুরি না করে । অতঃপর ঐ দশ হাজার টাকার সবগুলি নোট ঐ ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে দিয়ে সে আপদমুক্ত হয় । বলুন, এই নোটগুলো ফেলে দিয়ে সে আনন্দিত হবে, না দুঃখিত ? নিশ্চয়ই আনন্দিত হবে । কারণ, জীবন রক্ষা পেলে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করা যাবে । এ না করলে তো দশ বৎসরের জেল হত, আরও কত কি জরিমানা হত । 
এই লোকটির মনে পুলিশের উপর যেরূপ একিন রয়েছে, রাষ্ট্রের দন্ড ও ডান্ডার উপর যেরূপ একিন রয়েছে, অনুরূপভাবে আল্লাহওয়ালাদের সোহবতের দ্বারা অন্তরে যখন (পাপের পরিণামে) আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও জাহান্নামের উপর ঈমান ও একিন পয়দা হয়ে যাবে, তখন আর কষ্টের সাথে গুনাহ ছাড়তে হবে না, বরং নিজে নিজেই ছুটে যাবে, সহজেই গুনাহ ত্যাগের তাওফীক হয়ে যাবে । সেদিন গুনাহ ত্যাগ করে আপনি বিনীতপ্রাণে আল্লাহর দরবারে শোকর আদায় করবেন । 

0 comments:

Post a Comment

Write your comment here.
এখানে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।